এবারের 2021 এর বিধান সভা নির্বাচনে মেরুকরণ সুস্পষ্ট। যা পূর্বের লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপকভাবে অনুমান করা গিয়েছিল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোয়াজ্জেম ভাতা চালু করে যার সূচনা সৃষ্টি করেছিলেন। আর এই মোয়াজ্জেম ভাতা চালুর সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ নিজেদের ভাতা আদায়ের দাবিতে রাস্তায় আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তখন থেকেই বঙ্গের রাজনীতিতে ধর্মীয় মেরুকরণ একটা মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করে এবং রাজ্য রাজনীতিতে নামমাত্র এম.এল.এ, এম.পি থেকে আজ নির্বাচনের মাধ্যমে 19 টি এম পি বিজেপি করায়ত্ত করেছে এবং দল পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্রমেই বেড়ে চলছে বিজেপির এমপি এবং এম.এল.এ'র সংখ্যা। সমগ্র রাজ্যে এবং বিশেষত বড় বড় শহরে সরকারি স্কুল গুলি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। রমরমিয়ে গজিয়ে উঠছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতি বছর তৈরি হচ্ছে লক্ষ লক্ষ বেকার। শিল্প-কারখানা গড়ে না ওঠায় এবং বহু বছর ধরে এস.এস.সি সহ একাধিক সরকারী নিয়োগের পরীক্ষা আটকে থাকায় লাটে উঠেছে কর্মসংস্থান। কর্মসংস্থানের অভাবে ঘরে ঘরে বেকারত্বের জ্বালায় কাতরাচ্ছে বাংলার বেকার যুবক-যুবতীরা।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে লাগামহীন সন্ত্রাস, ভোটের নামে প্রহসন, বুথে বুথে ডিউটির নামে ভোট কর্মীদের মৃত্যু গহ্বরে ফেলে দেওয়ায় রাজ্যজুড়ে বইছে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হওয়া। মনোনয়নপত্র জমা থেকে শুরু করে ভোট পর্ব শেষ হওয়া পর্যন্ত শুধু অশান্তির ছোঁয়া রাজ্যবাসীকে বেজায় অতিষ্ঠ করে তুলেছে।
রাজ্যবাসীর সুইজারল্যান্ডের স্বপ্ন আজ মরুভূমির মরীচিকায় পরিণত হয়েছে। আর এই এত কিছু অশান্তির মধ্যেই প্রথমদিকে রাজনৈতিক সংঘর্ষ দুটি দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে তা রাজনৈতিক সংঘর্ষের নামে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে পরিণত হচ্ছে। যা নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগে রয়েছে বাংলার সাধারন জনতা। কর্মসংস্থানের কথা ভুলে বাংলার জনতা আজ নিজেদের মধ্যে রাজনীতির নামে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ময়দানে অবতীর্ণ হতে বেশি পছন্দ করছে। যা অদূর ভবিষ্যতে বাংলাকে এক মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে ধাবিত করবে।
আমরা কোচবিহার জেলার ঘটনা পরম্পরা বিচার-বিশ্লেষণ করে যে সমীক্ষা করেছি তাতে কোচবিহারে ৯ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৭ টি আসনে বিজেপির জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে শীতলকুচি বিধানসভা আসনে। সিতাই বিধানসভা আসনটি অনায়াসে তৃণমূলের দখলে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।