দিনহাটায় শিশু মঙ্গল সমিতির চাইল্ড কেয়ারের নামে জনসাধারণের কাছ থেকে অনুদান তোলা কতটা যুক্তিযুক্ত ?


(লেখক: মিহির গোস্বামী, MLA-নাটাবাড়ি বিধানসভা)

শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষামূলক কোনো উদ্যোগ নিয়ে কটু মন্তব্য করা বা বাধা সৃষ্টি আমার সর্বকালের রুচিবিরুদ্ধ; নীতিবিরুদ্ধ তো বটেই। কিন্তু সেই উদ্যোগ সবসময়ই হতে হবে নিয়মকানুন মেনে, বিশেষ করে যদি সেখানে জনগণের দেওয়া অর্থ জড়িত থাকে। একটি সংস্থা যার ঠিকানা দেখানো হচ্ছে কোনো এক রাজনৈতিক নেতার পার্টি অফিস, যে সংস্থার কোনো সরকারি রেজিস্ট্রেশন নেই, সেইরকম একটি সংস্থা কোনো সরকারি দপ্তরের পরিকাঠামো বা পরিসেবার উন্নতিকল্পে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যথাযোগ্য অনুমোদন ছাড়াই, কেবল নিজেদের ইচ্ছে হল বলে জনগণের কাছ থেকে অর্থ অনুদান চাইতে পারে কি?

বিধায়ক হিসেবে আমার যদি হঠাৎ খেয়াল চাপে, আমার এলাকার গ্রামীণ হাসপাতালটির দোতলা নির্মাণ করব জনগণের কাছ থেকে টাকা তুলে, সরকারি উচ্চ পর্যায়ের উপযুক্ত অনুমোদন না পেলে আমি কি সেই কাজ করতে পারব? জনগণের কাছ থেকে টাকা তুলতে পারব? নাকি এমএলএ হয়েছি বলে যা আমার মনে হয়েছে তাই করতে পারি?

উদয়ন গুহ মহাশয় অবশ্য এখন এমএলএ নন, তবু তিনি খামোখা আমার নিরীহ প্রতিক্রিয়ায় রেগে যাচ্ছেন। মানুষের কল্যাণে বা মানুষের জন্য কিছু করার 'সদিচ্ছায়' আমি তাঁর কাছে হয়তো অতি তুচ্ছ, কিন্তু আইনি আর বেআইনির ফারাকটাতো তিনি বিলক্ষণ বোঝেন। যে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এই সব অনুদানের টাকা জমা পড়ছে বলে তিনি দাবি করছেন সেই অ্যাকাউন্ট ডিটেইলসটা সর্বসমক্ষে জানিয়ে দিন না! মানুষ স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে সরাসরি সেই অ্যাকাউন্টেই অনুদান জমা করুক, অহেতুক ক্যাশ ঘাঁটাঘাটির বিড়ম্বনা থেকে আর অস্বচ্ছতার বিতর্ক থেকে আপনারাও মুক্তি পান।

উদয়নবাবু কোনো এক সংবাদ মাধ্যমে  তাঁর পিতৃদেব স্বর্গীয় কমল গুহ-র নিজের খরচে লোডশেডিং-কালে হাসপাতালে জেনারেটর চালাবার উদাহরণ দিয়েছেন। একজন মন্ত্রী তাঁর নিজের অর্থে মানুষের সেবায় জেনারেটর চালাতেন, তা নিয়ে আপত্তি কারুরই থাকার কথা নয়, ছিলও না। কিন্তু তা তো নিশ্চয়ই আর জনগণের কাছ থেকে টাকা তুলে করতেন না স্বর্গীয় কমলবাবু!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য দিন

নবীনতর পূর্বতন