সেবা বিনোদনের সঞ্চালক রমাকান্ত সরকারের কলমে:-কোচবিহারে রাজ্য ভাগের দাবীর ইতিহাস বহু পুরনো। KLO'র মত নিষিদ্ধ সংগঠনও কোচবিহার সহ সমগ্র উত্তরবঙ্গ জুড়ে আলাদা কোচ কামতাপুর রাজ্যের দাবীতে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের দগদগে স্মৃতি আজও স্মরণীয় হয়ে আছে উত্তরবঙ্গ বাসীর কাছে।
তদুপরি গ্রেটার কোচবিহার নেতা অনন্ত রায় এবং বংশী বদন বর্মনের নেতৃত্বে 2005 সালে আলাদা কোচবিহার রাজ্যের দাবিতে আমরণ অনশনে পুলিশের সঙ্গে অনশনকারীদের সংঘর্ষে 3 জন পুলিশ কর্মী এবং দু জন সাধারণ আন্দোলন কারীর মৃত্যু গ্রেটার কোচবিহারের আন্দোলনকে কিছুটা স্তিমিত করে দেয়।
এরও আগে অর্থাৎ নব্বইয়ের দশকের পরে KLO'র জঙ্গী আন্দোলনে বামফ্রন্ট জমানায় যেন রক্ত গঙ্গা বয়ে নিয়ে এসেছিল এই নিষিদ্ধ সংগঠন KLO. বহু CPIM নেতা কর্মীর প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল এই KLO
তখনকার শাসক দল বামফ্রন্ট ও বর্তমানের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস কোনো শাসক দলেই এই আলাদা রাজ্যের দাবী কোনোমতেই মানতে রাজি নয়।
এমনকি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের একটা বড় অংশও রাজ্য ভাগের তীব্র বিরোধিতার কথা সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন।
অতীতে কেপিপির নেতৃত্বে আলাদা রাজ্য ভাগের দাবীর আন্দোলনে একসময় উত্তাল হয়ে উঠেছিল উত্তরবঙ্গ। তা অবশ্য অতীত হলেও এখনও বর্তমান। কেননা এখনো ঐ সংগঠন তাদের সেই পুরনো দাবীতে অটল রয়েছেন।
ইদানিংকালে অবশ্য কে.এল.ও চিফ জীবন সিংহ তাঁর গোপন ডেরা থেকে অনবরত আলাদা রাজ্য ভাগের দাবী জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ঘন ঘন হুঁশিয়ারি দেওয়াতে উত্তরবঙ্গ জুড়ে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
কে এল ও চীফ জীবন সিংহের হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী কড়া ভাষায় বলেছেন যে তিনি ওই রকম বন্দুককে ভয় পান না এবং এই রকম বন্দুক দেখতে দেখতে তিনি অভ্যস্ত। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় পশ্চিমবঙ্গকে কখনো ভাগ হতে
দেবেন না।
আর এই ডামাডোলের মধ্যেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে উত্তরবঙ্গের তথা কোচবিহারের তথাকথিত মহারাজ নামে খ্যাত অনন্ত রায়কে এবং দার্জিলিংয়ের এক সময়ের বেতাজ বাদশা বিমল গুরুংকে তিনটি অপশনের প্রশ্নের উত্তর চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন।
এই তিনটি অপশনের মধ্যে প্রথমে রয়েছে আলাদা অঙ্গরাজ্য,দ্বিতীয়তঃ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং তৃতীয়তঃ স্ব-শাসিত পর্ষদ।
যা নিয়ে গোটা বাংলা জুড়ে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে যে কোনোদিন এই তিনটি বিষয়ের উপর সিদ্ধান্ত গৃহীত হতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে।
এবং এই তিনটি বিষয়ের যেকোনো একটিতে কেন্দ্রীয় সরকার সীলমোহর দিলে পশ্চিমবঙ্গ যে দ্বিখণ্ডিত হতে পারে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।