মায়ের কাছে মোবাইলের আবদার নস্যাৎ হওয়ায় সাত সকালেই আত্মহত্যা একাদশ শ্রেণীর ছাত্রীর,

বিলসী, তুফানগঞ্জ, রমাকান্ত সরকার,30 Dec.2020: বহুল প্রচলিত একটি কথা  "চিতাতেই সব শেষ"। স্নেহ ভালোবাসা মায়া মমতা অহঙ্কার এক নিমেষেই শেষ! কিন্ত কখনও কে ভেবেছেন মোবাইলেই সব শেষ ? হ্যা এটাই সত্যি! মোবাইলেই সব শেষ। তবে মোবাইল হাতে না আসতেই মোবাইলের দাবীতে সব শেষ। চাহিদার সঙ্গে যোগানের যেমন সম্পর্ক

ঠিক তেমনি জোগানের সঙ্গে অর্থেরও সম পরিমাণ সম্পর্ক। হয়তো ইচ্ছা থাকলেও উপায় হয় না। এক্ষেত্রে অবশ্য তাই হয়েছে। 

মুগাভোগ হাই স্কুলের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী প্রিয়া বর্মন। বর্তমানে স্কুল বন্ধ থাকায় সে তার বন্ধু বান্ধবীদের সঙ্গে আর পাঁচটা ছাত্রের মত শুধু প্রাইভেট যাতায়াত করছে। আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল 
কতিপয় ছাত্রের কাছে মোবাইল থাকাটা এখন রীতিমত সাহেবিপনায় পরিণত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
 বর্তমানে অবশ্য অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীর কাছে মোবাইল থাকাটা একটা স্বাভাবিক ঘটনায় পর্যবসিত হয়েছে। 

এতসব সত্বেও কিছু ছাত্রের কাছে মোবাইল আজও ব্রাহ্মণ হয়ে চাঁদে যাওয়ার মত আকাশ কুসুম কল্পনা ছাড়া কিচ্ছু নয়। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থাপন্ন পরিবার গুলিতে অবশ্য ছেলে-
 মেয়েদের মোবাইল দেওয়ার মত আবদার মেটানো
সোনার পাথর বাটি ছাড়া আর কিছু নয়। 

কোমলমতি কচি বয়সের ছেলে-মেয়েরা  মোবাইলের মত আধুনিক একটি যন্ত্রকে কিছুতেই হাত ছাড়া করতে রাজি নয়। বাবা-মায়ের ঝুলিতে 
পয়সা থাকুক আর না থাকুক কিন্তুমোবাইল চাই। 

শেষ পর্যন্ত এই আধুনিক যন্ত্রটি পাওয়ার আকুল আশায় ব্যর্থ হয়ে নিজের জীবনটাই শেষ করে দিলেন মুগাভোগ হাই স্কুলের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী 
প্রিয়া বর্মন।

প্রতিবেশী মারফৎ জানা যায় যে প্রিয়া বেশ কয়েক দিন যাবৎ তার মায়ের কাছে একটি মোবাইলের বায়না করে। হতদরিদ্র পরিবারের এক হতভাগা মায়ের পক্ষে যে এই আবদার বাস্তবে পূরণ করা সম্ভব নয় তা প্রিয়াকে জানিয়ে দেন প্রিয়ার মা।
প্রিয়ারা তিন বোন এক ভাই। দুই বড়ো দিদির বিয়ে হয়ে গেছে। বর্তমানে প্রিয়া ও তাঁর দাদা অবিবাহিত।

প্রিয়ার দাদা ও বাবা কর্মসূত্রে ভিন্ন রাজ্যে কাজ করছেন। বর্তমানে প্রিয়া ও তাঁর মা বাড়িতে থাকেন। বেশ কয়েক দিন থেকে প্রিয়া তার মায়ের
কাছে একটি মোবাইল কেনার বায়না ধরে। এই বিষয়টি নিয়ে মা ও মেয়ের সঙ্গে বেশ কয়েক দিন
থেকে মনোমালিন্য চলছে। গতকালকেও সে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। অবশেষে আজ সকালে প্রিয়ার মা একশো দিনের প্রকল্পে মাটি কাটার কাজে বাড়ির বাইরে গেলে মোবাইল না পেয়ে অভিমানে নিজের শোয়ার ঘরে কাপড় দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে পরে।

প্রতিবেশী মারফৎ বিপদের আন্দাজ পেয়ে প্রিয়ার মা ও তাঁর বড়ো দিদি দরজার ফাঁক দিয়ে প্রিয়াকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় এবং তৎক্ষণাৎ তাকে সেখান থেকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন
অতর্কিতে এই নবীন বয়সের এক ছাত্রীরআকস্মিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য দিন

নবীনতর পূর্বতন