বঙ্গে দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদার্পণ এবং শহীদ পরিবারের প্রতি সম্মান যাত্রা ঘিরে উত্তরবঙ্গে একের পর এক সমস্যার স্বীকার হচ্ছে নারায়ণী সেনা। শিলিগুড়িতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিককে বাগডোগড়া বিমান বন্দরে বরণ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয় নারায়ণী সেনা। দিনভর নাটকের পর অবশেষে সন্ধ্যায় মুক্তি পায় তাঁরা। এই ঘটনার পরের দিন হিন্দি হাই স্কুলে নারায়ণী সেনাদের পার্কিংরত গাড়ি গুলি তালাবন্ধ করা হয়। শেষ পর্যন্ত ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে তালামুক্ত হয় গাড়িগুলি। আর এই মহা নাটকের গ্যাড়াকলে পূর্ব নির্ধারিত বহু কর্মসূচি সফল করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায় বিজেপির পক্ষে। পর পর লাগাতার এই দলীয় কর্মসূচিকে ঘিরে প্রশাসনের বেনজির তৎপরতায় হতচকিত বিজেপি নেতৃত্ব।
গত দোসরা মে' বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে বিজেপি কর্মীদের ওপর আক্রমণের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাসে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে কোচবিহার জেলা। উত্তরবঙ্গে ভালো ফলাফল করে বিশেষত কোচবিহার জেলায় 9 টি আসনের মধ্যে সাতটি বিধানসভার আসন দখল করলেও সন্ত্রাসের মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হওয়ায় বিজেপি কর্মীদের মনোবল মারাত্মকভাবে ভেঙে পরে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে কোচবিহার জেলায় বিজেপিতে ব্যাপকভাবে ধ্বস নেমেছে। বহু বিজেপি কর্মী বিজেপি পরিত্যাগ করে তৃণমূলে ভীড় জমাচ্ছেন। এমনকি কোচবিহার জেলায় এমন কিছু জায়গা রয়েছে,যেখানে বিজেপি পুরোপুরিভাবে প্রায় নিশ্চিহ্ন হওয়ার দিকে।
আর এই ডামাডোলের মাঝে মনোবল হারানো বিজেপি কর্মীদের মনোবল বৃদ্ধি করতে দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আগমন যাত্রাকে,শহীদ সম্মান যাত্রা হিসেবে কোচবিহার জেলার বিভিন্ন অংশে পরিক্রমার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। আজ হল সেই কর্মসূচির দিন। কিন্তু এই কর্মসূচি নির্বিঘ্নে আদৌ সফল করতে পারবে কি বিজেপি ?
ইতিমধ্যে কোচবিহার জেলার অন্তর্গত প্রত্যেকটি থানার তরফ থেকে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলকে আগামী 31.08.2021 ইং তারিখ পর্যন্ত কোনোরূপ রাজনৈতিক কর্মসূচি বা জমায়েতের ক্ষেত্রে মহামারী আইনে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করার নির্দেশিকা প্রেরণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মহামারী আইন ভঙ্গের অপরাধে জমায়েত হওয়া বিজেপি কর্মীদের আটকে কর্মসূচি বানচাল করার চেষ্টা করা হতে পারে নতুবা গ্রেপ্তার করে আন্দোলন ভণ্ডুল করা হতে পারে। শহীদ সম্মান যাত্রার কর্মসূচিকে ঘিরে কোচবিহার জেলায় আজ ব্যাপক নারায়ণী সেনার সমাবেশ হওয়ার সম্ভাবনার সাথে সাথে একটা বিড়াট অংশের বিজেপি কর্মীদের জমায়েত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
এখন দেখার বিষয় মহামারী আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কতটা সফল হয় বিজেপির শহীদ সম্মান যাত্রা ?