করোনা ভাইরাস সংক্রমণ - একটি ভিন্ন প্রতিবেদন Part - III


করোনা ভাইরাস সংক্রমণ - একটি ভিন্ন প্রতিবেদন
(পূর্বে প্রকাশিতের পর)

তাহলে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি সম্পর্কে তিনটি মত দেখা যাচ্ছে। (1) বাদুড় থেকে এসেছে। (2 ) প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার ফলে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। (3) কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও আরও কিছু অসমর্থিত বক্তব্য প্রকাশিত হচ্ছে। বিজ্ঞান জগৎ আজও এ বিতর্ক অবসান করেনি। কোন রাষ্ট্র প্রকৃত সত্য উদঘাটনে কোন উদ্যোগ নিয়েছে কিনা 

সংবাদপত্রে এমন খবর আসেনি। এসেছে বিভিন্ন মতামত, বিতর্ক। সত্য জানার ক্ষেত্রে কেন এই সংকট আমাদের ভেবে দেখার সময় এসেছে।

পর্ব - ৩


প্রকৃতপক্ষে ভাইরাস হলো নির্জীব রাসায়নিক বস্তু।

জীবদেহে প্রবেশ করলেই সক্রিয় হয় । তখন সে জীব কোষের বিপাক ক্রিয়া বা মেটাবলিজম ধার করে দ্রুত প্রজনন ঘটায় অর্থাৎ বংশবৃদ্ধি করে । এই প্রজননের সময় তার চরিত্র পাল্টায়। একেই পরিব্যক্তি বা মিউটেশন বলা হয়। সুইজারল্যান্ডের বাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণারত অভিব্যক্তিবিদ অধ্যাপক রিচার্ড নেজের 'দ‍্য  সাইন্টিফিক' পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে জানান, নভেল করোনা ভাইরাসটি বিগত চার মাসে আটবার নিজেকে পাল্টেছে। তবে প্রতিটি পরিবর্তনে নিয়ত পরিবর্তনশীল এই ভাইরাস আরও সাংঘাতিক হয়ে উঠবে, একথা বিজ্ঞান বলেনি। তার ভয়ঙ্কর হওয়া ও ভালো হবার সম্ভাবনা ৫০% করে। 

এই ভাইরাস ভয়ঙ্কর হলে কি হয়? 

মানুষের দেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে ভয়ঙ্কর যে রোগের সৃষ্টি হয় তার নাম COVID-19 বা করোনা ভাইরাস ডিসিজ। সাধারণত সব ধরনের মানুষকে এই ভাইরাস সংক্রমণ করে। বলা হচ্ছে, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং যারা বয়স্ক তাদের এই রোগ মারাত্মক ভাবে আক্রমণ করার সম্ভাবনা বেশি। একবার আক্রান্ত হলে রোগ দ্রুত বাড়তে থাকে। এমনকি বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

 এখন প্রশ্ন হলো - কিভাবে ছড়ায়?

এর উত্তরে বলা হয়েছে - এই ভাইরাস বাতাসে একা একা ভেসে বেড়াতে পারে না বা দৌড়ে গিয়ে নিজে কারও দেহে প্রবেশ করতে পারে না। কারণ সে তো নির্জীব বস্তু। ফলে প্রথম কোন ব্যক্তিকে কিভাবে আক্রমণ করল বা কোথা থেকে এসে কিভাবে মানুষের দেহে প্রবেশ করল - এ প্রশ্নের যথাযথ উত্তর আজও নেই।

তবে খবরে প্রকাশ, চীন দেশে প্রথমে দেখা গেছে, মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, মারাও গেছে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা সর্বত্র গিয়েছে, তাদের সংস্পর্শে মানুষ থেকে মানুষে দ্রুত ছড়িয়েছে। কিন্তু কিভাবে?

আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাস প্রশ্বাস এর ফলে যে ড্রপলেট প্রতিনিয়ত বায়ুমন্ডলে আসছে, সেই ড্রপলেট কেই আশ্রয় করে থাকে ভাইরাসটি। বলা হচ্ছে এই ড্রপলেট ৬ফুট দূরত্ব পর্যন্ত বায়ুতে ভেসে থাকতে পারে। ওই দূরত্বের মধ্যে কোন ব্যক্তি থাকলে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে নির্গত ড্রপলেট তার দেহে এসে পড়বে। তখন সে ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। তবে ড্রপলেট হাতে-পায়ে গায়ে পড়লেই দেহে ভাইরাস প্রবেশ করবে না। চোখ, মুখ ও নাকের ভেজা অংশের সংস্পর্শে এলেই দ্রুত দেহে প্রবেশ করবে। 

মানুষের দেহে কিভাবে প্রবেশ করে?

করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বাইরের অংশে কাটা থাকে। দেহে প্রবেশ করলেই সে সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং ওই কাটার সাহায্যে দেহের জীবন্ত কোষকে ধরে ফেলে, কোষের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়তে সচেষ্ট হয়, ঢুকেও পরে। কোষের মেটাবলিজম ধার করে দ্রুত বংশ বিস্তার করতে শুরু করে। দেহ তখন ওই বহিরাগতকে প্রতিরোধ করতে বা রুখে দিতে সক্রিয় হয়। যদি মেরে ফেলতে পারে বা বাগে আনতে পারে তবে মানুষ বেঁচে যায়। আর যদি না পারে, তাহলে বংশবৃদ্ধিপ্রাপ্ত ভাইরাসগুলো দেহের অন্যান্য কোষকে আক্রমণ করে এবং একটা পরিণতির দিকে নিয়ে যায়। তখন দেহে COVID-19 -এর উপসর্গগুলি দেখা দিতে শুরু করে।

(ক্রমশঃ)


(লেখক সন্ধানী চক্রবর্তী, মতামত নিজস্ব)


 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মন্তব্য দিন

নবীনতর পূর্বতন